খ্যাতিমান অভিনেতা সাদেক বাচ্চুর প্রথম প্রয়াণ দিন আজ। গত বছরের এই দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬৬ বছর বয়সে মারা যান তিনি।
সাদেক বাচ্চুর স্মরণে চিত্রনায়ক শাকিব খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সিনেমায় আমার অভিভাবক ছিলেন তিনি। জীবনের নানা সময়ে তার কাছ থেকে অনেক বিষয়ে সাহস পেয়েছি আমি। অভিভাবক হয়ে নিয়মিত আমার খোঁজ খবর রাখতেন।’
‘আমাদের মধ্যে একটা মায়ার বন্ধন ছিল’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতাম। তাকে যেকোনো কথা বলতে পারতাম। আমাদের মধ্যে নির্ভরতার জায়গা ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এতগুলো বছর ধরে কাজ করে অনেকের সঙ্গে পরিচয় ও সুসম্পর্ক থাকলেও হাতে গোনা কয়েকজন হৃদয়ে ঠাঁই পেয়েছেন। তাদেরই একজন ছিলেন তিনি।’
‘গত ২০ বছর ধরে আমরা এক সঙ্গে পথ চলেছি। তার মুক্তি পাওয়া শেষ সিনেমা “বীর” এ আমিও অভিনয় করেছি। বাংলা সিনেমায় কয়েক দশকের ক্যারিয়ারে তিনি অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। দর্শকের হৃদয়ে কর্ম-গুণে বেঁচে থাকবেন তিনি। সাদাকালো বা সিনেমার রঙিন পর্দায়।’
চলচ্চিত্রে সাদেক বাচ্চু হিসেবে পরিচিত মাহবুব আহমেদ ১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।
জীবনের শেষ বছরগুলোতে অভিনয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলেন সাদেক বাচ্চু। তাকে নতুন নাটক বা চলচ্চিত্রে কম দেখা যেত। এর আগে পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন ও সিনেমায় ছিল তার পদচারণা।
নব্বইয়ের দশকে খ্যাতিমান পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী’ সিনেমায় অভিনয় করে পরিচিতি পান তিনি। রেডিও ও টেলিভিশনের আগে মতিঝিল থিয়েটারে সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। আমৃত্যু দলটির সভাপতিও ছিলেন তিনি।
মহিলা সমিতির মঞ্চে এক নাটকে সাদেক বাচ্চুর অভিনয় দেখে তাকে বিটিভিতে ডেকে নেন প্রযোজক আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। ১৯৭৪ সালে বিটিভিতে তিনি অভিনয় করেন ‘প্রথম অঙ্গীকার’ নাটকে। তার অভিনীত নাটকের সংখ্যা এক হাজারের বেশি। প্রথম অভিনীত সিনেমা শহীদুল আমিন পরিচালিত ‘রামের সুমতি’।
বহুমাত্রিক এই অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘জীবননদীর তীরে’, ‘জোর করে ভালোবাসা হয় না’, ‘তোমার মাঝে আমি’, ‘ঢাকা টু বোম্বে’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘এক জবান’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘বধূবরণ’, ‘ময়দান’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘প্রিয়জন’, ‘সুজন সখী’ ইত্যাদি।