ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাহী হাকিম মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে বুধবার ওই বাড়ির সীমানা প্রাচীর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
ডিএসসিসি বলছে, বাড়ির ওই সীমানা প্রাচীরটি অবৈধ ছিল। তবে মনোয়ারের দাবি, নিয়ম মেনেই ওই প্রাচীর নির্মাণ করেন তিনি।
মনোয়ার হোসেন গাইবান্ধা-৪ আসনে এনিয়ে তৃতীয়বার আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
ধানমণ্ডি লেকের পরিবেশগত উন্নয়ন এবং লেক ঘিরে ওয়াকওয়ে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। লেক অভিমুখে অবৈধভাবে সম্প্রসারিত ১৮টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। সেগুলোর মধ্যেই পড়েছে মনোয়ারের সীমানা প্রাচীর। বুধবার তারটিসহ তিনটি স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়।
ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,
“স্থাপনাগুলো নিয়ম বহির্ভূতভাবে যেমন লেকের জায়গা অবৈধভাবে দখল করেছে, তেমনি লেকের পানির দূষণ বাড়ছে। তাই লেকের পরিবেশ অটুট রাখা এবং লেক ঘিরে ওয়াকওয়ে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজ করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
“প্রথম দিনে লেকমুখী তিনটি স্থাপনার অবৈধ বর্ধিতাংশ ও প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়। আগামীকালও সেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে এবং সকল স্থাপনার অবৈধ বর্ধিতাংশ উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান থাকবে।”
উচ্ছেদ অভিযানের সময় মনোয়ার বাড়িতেই ছিলেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৫৮ সালে জমিটি তার শাশুড়ির নামে গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তারপর থেকে এই সীমানা প্রাচীর রয়েছে। ২০ বছর আগে সিটি কর্পোরেশন লেকের পাড় নির্মাণের সময়ও সীমানা প্রাচীরটি অক্ষত ছিল। এখন প্রাচীরের সঙ্গে গাছপালাও কেটে দিয়েছে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ।
কোনো ধরনের নোটিস না দিয়ে ‘অবৈধভাবে’ তার সীমানা প্রাচীর ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মনোয়ার বলেন, “গণপূর্ত অধিদপ্তরের বরাদ্দ দেওয়া জমি সিটি কর্পোরেশন দখলে নিতে পারে না। তারপরও তারা বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে দিয়েছে। এ বাড়ির প্রাচীর ভাঙতে হলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে চিঠি নিতে হবে এবং তারা আমাকে অবহিত করবেন।
“আমি মনে করি, এই বাড়ি অবৈধভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছে।”
অভিযানের সময় নিজের দাবির পক্ষে দলিলপত্রও হাকিমকে দেখিয়েছেন বলে জানান মনোয়ার।
“আমি ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামানকে কাগজ দেখালাম। উনি নিজেই কাগজগুলো দেখলেন। আমি মেয়রকে ১০-১৫ বার ফোন দিয়েছি, ধরেননি।
“না পেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাহেব বললাম। তিনি বলেছেন, ‘আমি মেয়রকে বলছি’। বাস্তবে বলছেন কি না, সেটা আমি জানি না। কিন্তু এর মধ্যেই দেয়াল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমার তো কাগজপত্র আছে, তাহলে এটা উনারা করতে পারেন না।”
এ বিষয়ে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম কিংবা মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের কোনো বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।
তবে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা নাছের বলেন, তারা সরেজমিন জরিপ চালিয়েই অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করেছেন।
“মেয়র মহোদয় সেখানে কয়েকবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। করপোরেশনের সার্ভেয়ারগণ সেখানে মাপ-জোকও সম্পন্ন করেছেন।”