সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার এ প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রতি চীনের পদক্ষেপকে ‘জবরদস্তিমুলক’ বলে আখ্যায়িত করে এটি ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি হুমকি’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অনলাইনে অনুষ্ঠিত এ ভার্চুয়াল সম্মেলনে এ দিন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কোচিয়াংও যোগ দিয়েছিলেন।
বাইডেন বলেন, একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে ওয়াশিংটন ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি কৌশলগত যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। চীন দক্ষিণ চীন সাগরের অধিকাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে এবং উগ্র গণতান্ত্রিক তাইওয়ানের ওপর সামরিক ও রাজনৈতিক চাপ বাড়িয়ে তুলছে।
তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘পাথরসম দৃঢ়’ প্রতিশ্রুতি আছে বলে সম্মেলনে ফের উল্লেখ করেন বাইডেন।
চীন ‘আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার’ প্রতি হুমকি তৈরি করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “চীনের জবরদস্তিমূলক পদক্ষেপে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
১০ জাতির সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশন্স (আসিয়ানের) এর এ সম্মেলনে লে কোচিয়াং বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি, স্থিতিশীলতা, জাহাজ চলাচল ও উপরে বিমান চলাচলের স্বাধীনতা সবার স্বার্থেই বজায় রাখতে হবে।
“দক্ষিণ চীন সাগর আমাদের সবার বাড়ি,” বলেন তিনি।
গত সপ্তাহে বাইডেন বলেছিলেন, ১৯৭৯ সালের একটি আইন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের আত্মরক্ষায় সহযোগিতা দিতে বাধ্য, তাই চীন আক্রমণ করলে দ্বীপটিকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে যাবে।
এ ধরনের কোনো কিছু হলে ওয়াশিংটন কীভাবে সাড়া দেবে তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতার’ নীতি অবলম্বন করে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু বাইডেনের মন্তব্যে দেশটির ওই অবস্থান থেকে সরে আসার ইঙ্গিত থাকায় এ নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তাইওয়ানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে কোনো পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেননি বাইডেন। আর কিছু বিশ্লেষক বাইডেনের ওই মন্তব্যকে ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ অভিহিত করে তা ধর্তব্য নয় বলে মতামত দেন।
সম্প্রতি ধারবাহিকভাবে তাইওয়ান প্রণালীর ওপর দিয়ে চীনের যুদ্ধবিমান বিমানবহর মহড়া দেওয়ায় স্বশাসিত দ্বীপটির সঙ্গে বেইজিংয়ের উত্তেজনা তীব্র হয়ে উঠেছে।
গত সপ্তাহে বাইডেনের মন্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে চীন। তারা ওয়াশিংটনকে আহ্বান জানিয়ে বলেছে, “চীন-যুক্তরাষ্ট্র মিত্রতা ও তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তি ও স্থিতিশীলতার গুরুতর ক্ষতি এড়াতে তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী শক্তিগুলোর কাছে ভুল ইঙ্গিত পাঠাবেন না।”
সম্মেলনে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সমালোচনায় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার নেতাদের সঙ্গে যোগ দেন বাইডেন।
মিয়ানমারের রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ও দেশটিকে গণতন্ত্রে ফেরার আহ্বান জানিয়ে বাইডেন বলেন, “মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে সৃষ্ট শোচনীয়তা, যা ক্রমবর্ধমানভাবে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে নাজুক করে তুলছে, মোকাবেলা করতে হবে আমাদের।”
জোটের সদস্য দেশ মিয়ানমারে কোনো প্রতিনিধি ছাড়াই মঙ্গলবার আসিয়ানের তিন দিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হয়। আঞ্চলিক এ জোটের শান্তি প্রস্তাবকে অগ্রাহ্য করায় দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা প্রধানকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।