গত ১৪ অক্টোবর মানিকগঞ্জের চারটি স্কুলে নবম ও দশম শ্রেণির ১২০ শিক্ষার্থীকে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেওয়া হয়। তাদের ১০ থেকে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে তখনই জানানো হয়েছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, ওই শিক্ষার্থীদের কারও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
“আমরা তাদের পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তারা সবাই ভালো আছে।”
দেশে কোভিড-১৯ টিকা প্রয়োগ শুরুর আট মাস পর স্কুল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়া হয়।
এসব শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণে রাখার পর সারাদশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলে আসছেন, স্কুলশিক্ষার্থীদের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পেলেই তারা টিকা দেওয়া শুরু করবেন।
সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন।
“শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব প্রস্তুতি নিয়ে যখন আমাদের জানাবে, তখন আমরা টিকাদান শুরু করব। আমরা প্রস্তুত আছি।”
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বুধবার ঢাকার বিএসএমএমইউতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আশা করছি খুব শিগগিরই, সপ্তাহখানেকের মধ্যেই বা তারও আগে আমরা এটি (টিকাদান) শুরু করতে পারব।
“আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। রেজিস্ট্রেশনের কাজটি আরেকটু এগোলেই আমরা এটি শুরু করতে পারব।”
তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, এখনও তাদের প্রস্তুতি শেষ হয়নি।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সারা দেশের শিক্ষার্থীদের তালিকা নিচ্ছি। তাদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর, জন্ম তারিখ, তাদের অভিভাবকদের মোবাইল নম্বর- এগুলো আমরা জোগাড় করছি। এই কাজটি শেষ হলে হবে রেজিস্ট্রেশন। তারপর টিকা দেওয়া হবে।”
কতজন শিক্ষার্থীর তালিকা নেওয়া হয়েছে, তা দু-একদিনের মধ্যে জানা যাবে বলে জানান তিনি।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ধারণা দিয়েছিলেন, ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী দেড় কোটির মতো স্কুলশিক্ষার্থী রয়েছে।
ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে ২১টি জেলায় শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। এসব শিশুদের টিকা দেওয়ার জন্য আলাদা টিকাদান কেন্দ্র করা হবে।
সারাদেশে কতগুলো কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে- এ প্রশ্নে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “কতগুলো কেন্দ্র হবে এই মুহুর্তে বলা মুশকিল। তবে আমরা ঢাকার বাইরে ২১টি জেলায় টিকা নিচ্ছি। অন্যান্য জেলাগুলোয় টিকা নিতে আমরা সক্ষমতা বাড়াচ্ছি। পর্যায়ক্রম সবগুলো জেলায় ফাইজারের টিকা যাবে।”
২১টি জায়গায় টিকা দেয়ার কথা থাকলেও এখনও কেন্দ্র নির্বাচন করা হয়নি বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক।
তিনি বলেন, “আমরা সারাদেশের কেন্দ্রগুলোও নির্বাচন করতে পারিনি, ঢাকারটাও এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ঢাকায় একটা কেন্দ্র হবে নাকি ১২টা কেন্দ্র হবে, সেটা ঠিক হয়নি এখনও। ঢাকারটা আগে চূড়ান্ত করব। তারপরে সারা দেশে যাব।”