ঢাকা: বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ নির্মাণ করে কর্ণফুলী নদীর দুই তীরকে যুক্ত করতে ইতোমধ্যে চীনের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। নয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশে প্রথমবারের মতো নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের কাজটি বাস্তবায়ন করছে চায়না কমিউনিকেশন্স কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি)।তবে প্রস্তাব উঠলেও সিসিসিসিকে দেওয়া হয়নি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের দায়িত্ব।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল ক্রয় কমিটির সভায় প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও ঊর্ধ্বতন কমকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সামসুল আরেফিন।
সিসিসিসি’র প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কিছু ব্যত্যয় ও মিসিং লিংক আছে। এগুলো প্রতিপালন করে আসলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২৫তম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩১তম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অর্থনৈতিক ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ৩টি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ১টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রস্তাবে অর্থের পরিমাণ ৩৩ কোটি ৯৫ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৫ টাকা। এতে সম্পূর্ণ অর্থ জিওবি থেকে ব্যয় করা হবে। প্রস্তাবের আওতায় ২০২২ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরের (১ম ও ২য় শ্রেণি) বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের ৭২টি লটে সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন ২৫টি দরদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৩৩ কোটি ৯৫ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৫ টাকায় ১ কোটি ৮৮ লাখ ৭৫ হাজার ৭৩৫ কপি বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।এছাড়া স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট ‘কোভিড ফিল্ড হাসপাতাল’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে দ্রুততম সময়ে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট ‘কোভিড ফিল্ড হাসপাতাল’ স্থাপনের পূর্ত কাজ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬ এর ধারা ৬৮(১) এবং পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ক্রয়ের প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ২৮ লাখ ২২ হাজার টাকা।
সভায় অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই না এই মহামারী আমাদের মাঝে আর ফিরে আসুক। তবে যদি প্রয়োজন হয় তবে আরও ফিল্ড হাসপাতাল হবে। আমাদের সার্ভিস ডেলিভারি দিতে হবে। এটা সরকারের প্রথম প্রায়োরিটি।
পুঁজিবাজারের তহবিল প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তা সরকারি সিদ্ধান্ত। তারা যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেবে।
অন্যদিকে সভায় রামপুরা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে বাস্তবায়নে বিনিয়োগকারী নির্বাচনের লক্ষ্যে দরপত্র পুনঃমূল্যায়নের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়নি।