বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য নীতি গ্রহণ করার জন্য ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল মার্কিন সরকারকে রাজি করানোর চেষ্টা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের আয়োজনে মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ ফরওয়ার্ড: দ্য ফ্রন্টিয়ার ফর গ্রোথ’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল গোলটেবিল আলোচনায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘ অধিবেশন উপলক্ষে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউ ইয়র্কের হোটেল থেকেই ভার্চুয়াল আলোচনায় যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও উপস্থিত ছিলেন আলোচনায়।
সঞ্চালনায় ছিলেন ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি নিশা বিসওয়াল, তিনিই উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এ আয়োজনে অংশ নেন।
তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা আইসিটি, নবায়নযোগ্য জালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, সামুদ্রিক অর্থনীতি, পর্যটন, হাই-টেক শিল্পসহ অন্যান্য আকর্ষণীয় খাতে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রন জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমানে বছরে ৯ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। তা আরও বাড়াতে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে।
“আমাদের দুই দেশের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার পূর্ণ সহযোগিতা দিয়ে যাবে, এই নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি।”
সুবিধাজনক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে যখন বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটবে, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে এবং রপ্তানি খাতের আরও সম্প্রসারণ করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা আমরা সাদরে গ্রহণ করব।”
জ্বালানি, ব্যাংকিং ও বীমা খাতে বিপুল অংকের বিনিয়োগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রই এখন বাংলাদেশে সবচেয় বড় বিনিয়োগকারী দেশ। শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং মার্কিন বাজারে অন্যান্য বাণিজ্য সুবিধার মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক আরো জোরদার হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব অভিন্ন মূল্যবোধ ও যৌথ আগ্রহের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে আমাদের এই পারস্পারিক সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটেছে।”
এ গোলটেবিলের আয়োজন করায় ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল এবং এর সভাপতি নিশা বিসওয়ালকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
২০২১ সালের ৬ এপ্রিল ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের উদ্বোধনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এ সংগঠনের অন্যতম প্রথম কাজ ছিল বাংলাদেশে কোভিডে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানো।
সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশ সরকার যে অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ সরবারাহের উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে, সে কথা এ আলোচনায় তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে একশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে, তার একটি কেবল মার্কিন কোম্পানিগুলোকে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ। এছাড়া বাংলাদেশের ২৮টি হাই-টেক পার্কেও মার্কিন কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে পারে।