ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর মেয়েকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন তানোর উপজেলার দর্শনাথ হালদার। গতকাল রোববার তাঁর মেয়েকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। দর্শনাথ হালদার বলেন, প্রতিদিনই তাঁর মেয়ের রক্ত পরীক্ষা করাতে হয়েছে। দিনে চারটি পর্যন্ত পরীক্ষা করাতে হয়েছে। এসব পরীক্ষা করাতে ১ হাজার ৮৮০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। সব পরীক্ষাই বাইরে করাতে হয়েছে। হাসপাতালে চেষ্টা করেও তিনি পরীক্ষা করাতে পারেননি। বলা হয়েছে, এগুলো হাসপাতালে হয় না। বাইরে করাতে হবে।
আরেকজন রোগীর স্বজন রবিউল আলম জানান, তিনি ঢাকায় থাকেন। বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায়। ছেলেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসক পাঁচটি পরীক্ষা দেন। গতকাল রোববার সকালে হাসপাতালের ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে বলেন, শুধু একটি পরীক্ষা বহির্বিভাগের প্যাথলজিতে না–ও হতে পারে। বাকিগুলো মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই হবে।
রবিউল আলম বলেন, তিনি বহির্বিভাগের প্যাথলজিতে গিয়েছিলেন। ক্যাশ কাউন্টারে একজন নারী ও একজন পুরুষ বসে ছিলেন। তাঁরা দুজনেই বলেছেন, এখানে ডেঙ্গুর কোনো পরীক্ষা হবে না। যন্ত্রপাতি নষ্ট। তাঁরা পরীক্ষাগুলো বাইরে করানোর পরামর্শ দেন। ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগেও পাঠিয়েছিলেন। সেখানেও বলা হয় যন্ত্র নষ্ট। পরে বাধ্য হয়ে তিনি একটি বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্র থেকে ৩ হাজার ৫৫০ টাকা দিয়ে পরীক্ষাগুলো করিয়েছেন।
বাইরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপারে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ডেঙ্গু রোগের সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা হাসপাতালের প্যাথলজিতেই আছে। দালালদের দৌরাত্ম্যের কারণে রোগীদের এমন সমস্যা হচ্ছে।
কিন্তু হাসপাতালের বহির্বিভাগের প্যাথলজির ইনচার্জ মাহমুদা নাজনীন গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, এখানে রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কি না, শুধু সে পরীক্ষা করা যায়। অন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই।